৭ মার্চ, ২০১০

৭ মার্চের ভাষণ পাকিস্তানী এক মেজরের দৃষ্টিতে

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ সেদিন বাঙালীদের স্বাধীনতার জন্য উজ্জীবিত করেছিল। রমনার রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে তাঁর সেই ভাষণ আজও অমর বাণী হয়ে আছে। তাঁর সেই ভাষণ পরবর্তিতে রাজনৈতিক ও গবেষণার উপাদানে পরিণত হয়। বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণের প্রশংসা করেছেন ঢাকায় তৎকালীন পাক বাহিনীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মেজর সিদ্দিক সালিক। খবর বাসসর।

মেজর সালিক তাঁর 'উইটনেস টু সারেন্ডার' বইতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অকপটে প্রশংসা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের আগে ঢাকা গুজব, আতঙ্ক ও শঙ্কার নগরীতে পরিণত হয়েছিল। সে সময় পাকিস্তানের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের সদর দফতর থেকে এ ধরনের বক্তব্য ঢাকা রেডিও স্টেশন থেকে প্রচার না করার নির্দেশ দেয়া হয়। মেজর বলেন, আমি নিজেই সেই বার্তা নিয়ে রেডিওতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওই সময় রেডিওতে দায়িত্ব পালনরত বাঙালী বন্ধু আমাকে জানান, সাড়ে সাত কোটি মানুষের মনের কথা যদি প্রচার করতে না পারি তাহলে আমি চাকরি করতে চাই না। এরপর তিনি রেডিওর সম্প্রচার বন্ধ করে দেন।

মেজর সিদ্দিক সালিক বলেন, বঙ্গবন্ধু সেই কালজয়ী ভাষণ দেয়ার জন্য ওই দিন বিকেলে ডায়াসে উঠে জনসমুদ্রের চারদিকে একবার তাকালেন। তারপর শুরু করলেন তাঁর সেই অগ্নিঝরা ভাষণ। তিনি এককভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। কিন্তু তিনি ২৫ মার্চে জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেয়ার জন্য চারটি পূর্বশর্ত আরোপ করলেন। তা হলো সামরিক আইন প্রত্যাহার করতে হবে, জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে হবে এবং যেসব বাঙালীকে হত্যা করা হয়েছে সেব্যাপারে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। তাঁর সেদিনের বক্তব্য শুনতে যারা জড়ো হয়েছিল, বক্তব্য শোনার পর তাদের মনে হয়েছে যেন কোন মসজিদ বা গির্জা থেকে ধর্মীয় কোন সমাবেশ শেষে তাঁরা স্বন্তিতে বাড়ি ফিরছেন।

বঙ্গবন্ধু সেদিন জনতাকে ক্ষেপিয়ে দিয়ে ক্যান্টনমেন্টমুখী না করে যেভাবে রক্তপাত এড়িয়েছিলেন, মেজর সিদ্দিক সালিক তাঁর সেই প্রজ্ঞার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ