৩ মার্চ, ২০১০

৩ মার্চ ১৯৭১

একাত্তরের এ দিনে মুক্তিকামী শোষিত-বঞ্চিত বাঙালী ছিল বিৰুব্ধ, প্রতিবাদমুখর। পাকিস্তানী শাসকদের কার্ফু অগ্রাহ্য করে ঢাকাসহ সর্বত্র অসংখ্য মিছিল হয়েছে। সংবাদপত্রে যাতে দুর্বার আন্দোলনের খবর প্রকাশিত হতে না পারে সেজন্য সামরিক জানত্মা সেন্সরশিপ আরোপ করেছিল একাত্তরের এ দিনে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে অহিংস অসহযোগ আন্দোলন চলছিল বাংলার সর্বত্র।

এদিকে একাত্তরের ১ মার্চ থেকেই বাঙালী জাতির দৃষ্টি ছিল ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু কী ঘোষণা দেন_ সেদিকে। আর পাকিসত্মানের শোষণ-বঞ্চনা নয়, চাই মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ। এই মুক্তির প্রত্যাশায় দেশের বিভিন্ন স্থানে গঠিত হতে থাকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ। গোপনে চলে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি। এসব সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে যোগ দিতে থাকে মুক্তির স্বপ্নে বিভোর দেশের তরতাজা বাঙালী যুবকরা। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ পেলেই দেশমাতৃকাকে মুক্ত করতে যে কোন আত্মত্যাগে প্রস্তুতি নিতে থাকে বাঙালীরা।
অগি্নগর্ভ মার্চের বাঙালীর প্রবল আন্দোলনে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকিসত্মানী সামরিক জানত্মারা। কিভাবে বাঙালীর এই আন্দোলন কঠোরভাবে দমন করা যায় সে ব্যাপারে নীলনকশা করতে থাকে সামরিক জানত্মা ও তাদের এ দেশীয় দোসররা। বিশ্বের কাছে স্বাধীনতার জন্য বাঙালীর এই বাঁধভাঙ্গা আন্দোলন-সংগ্রামের খবর যাতে কোনভাবেই যেতে না পারে সে জন্য তৎপর হয়ে ওঠে পাকি জেনারেলরা। শুধু সেন্সরশিপ আরোপই নয়, কোনভাবেই যাতে বাঙালীর আন্দোলন-সংগ্রামের খবর না ছাপা হয় সে জন্য প্রতিটি সংবাদপত্রের অফিসে ফোন বা স্বশরীরে গিয়ে হুমকি-ধমকিও দেয়া হয়।

বাঙালী জাতির এমনই আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় শুরম্ন হয়েছিল প্রাণঘাতী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। প্রশিৰিত পাকিসত্মানী সামরিক বাহিনীকে পরাসত্ম করে বীর বাঙালী বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছিনিয়ে এনেছিল মহামূল্যবান স্বাধীনতা_ স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি তাই নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে স্মরণ করছে দেশমাতৃকার জন্য আত্মোৎসর্গকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।

আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি গতকাল ২ মার্চ প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন দিবস পালন করে। এ উপলৰে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত আলোচনাসভা থেকে সরকারীভাবে এ দিনটি পালনের দাবি জানানো হয়। বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ছাত্র সমাজের পৰ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বটতলায় তৎকালীন ডাকসু ভিপি আ স ম আবদুর রব স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস এ পতাকাকেই বাংলাদেশের পতাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই স্বাধীনতার ইতিহাসে ২ মার্চ এক অনন্য দিন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ