একাত্তরের এ দিনে মুক্তিকামী শোষিত-বঞ্চিত বাঙালী ছিল বিৰুব্ধ, প্রতিবাদমুখর। পাকিস্তানী শাসকদের কার্ফু অগ্রাহ্য করে ঢাকাসহ সর্বত্র অসংখ্য মিছিল হয়েছে। সংবাদপত্রে যাতে দুর্বার আন্দোলনের খবর প্রকাশিত হতে না পারে সেজন্য সামরিক জানত্মা সেন্সরশিপ আরোপ করেছিল একাত্তরের এ দিনে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে অহিংস অসহযোগ আন্দোলন চলছিল বাংলার সর্বত্র।
এদিকে একাত্তরের ১ মার্চ থেকেই বাঙালী জাতির দৃষ্টি ছিল ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু কী ঘোষণা দেন_ সেদিকে। আর পাকিসত্মানের শোষণ-বঞ্চনা নয়, চাই মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ। এই মুক্তির প্রত্যাশায় দেশের বিভিন্ন স্থানে গঠিত হতে থাকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ। গোপনে চলে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি। এসব সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে যোগ দিতে থাকে মুক্তির স্বপ্নে বিভোর দেশের তরতাজা বাঙালী যুবকরা। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ পেলেই দেশমাতৃকাকে মুক্ত করতে যে কোন আত্মত্যাগে প্রস্তুতি নিতে থাকে বাঙালীরা।
অগি্নগর্ভ মার্চের বাঙালীর প্রবল আন্দোলনে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকিসত্মানী সামরিক জানত্মারা। কিভাবে বাঙালীর এই আন্দোলন কঠোরভাবে দমন করা যায় সে ব্যাপারে নীলনকশা করতে থাকে সামরিক জানত্মা ও তাদের এ দেশীয় দোসররা। বিশ্বের কাছে স্বাধীনতার জন্য বাঙালীর এই বাঁধভাঙ্গা আন্দোলন-সংগ্রামের খবর যাতে কোনভাবেই যেতে না পারে সে জন্য তৎপর হয়ে ওঠে পাকি জেনারেলরা। শুধু সেন্সরশিপ আরোপই নয়, কোনভাবেই যাতে বাঙালীর আন্দোলন-সংগ্রামের খবর না ছাপা হয় সে জন্য প্রতিটি সংবাদপত্রের অফিসে ফোন বা স্বশরীরে গিয়ে হুমকি-ধমকিও দেয়া হয়।
বাঙালী জাতির এমনই আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় শুরম্ন হয়েছিল প্রাণঘাতী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। প্রশিৰিত পাকিসত্মানী সামরিক বাহিনীকে পরাসত্ম করে বীর বাঙালী বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ছিনিয়ে এনেছিল মহামূল্যবান স্বাধীনতা_ স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি তাই নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে স্মরণ করছে দেশমাতৃকার জন্য আত্মোৎসর্গকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।
আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি গতকাল ২ মার্চ প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন দিবস পালন করে। এ উপলৰে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত আলোচনাসভা থেকে সরকারীভাবে এ দিনটি পালনের দাবি জানানো হয়। বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ছাত্র সমাজের পৰ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বটতলায় তৎকালীন ডাকসু ভিপি আ স ম আবদুর রব স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস এ পতাকাকেই বাংলাদেশের পতাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই স্বাধীনতার ইতিহাসে ২ মার্চ এক অনন্য দিন।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
জনপ্রিয় পোস্টসমূহ
-
আবদুল কাদের মোল্লা থাকেন রাজধানীর বড় মগবাজারের জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশে গ্রিনভ্যালি অ্যাপার্টমেন্টে। তাঁর বিরুদ্ধে একাত্তর...
-
বিদেশী বন্ধুদের জন্য সম্মানা ক্রেস্ট মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদান রাখার জন্য বিদেশী বন্ধুদের সম্মাননা দেওয়া হবে। মানুষের চেতনায় লেখা হয়ে যাব...
-
প্রিন্সিপাল রুহুল কুদ্দুস সমকাল প্রতিবেদক কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত খুলনা-৬ আসন থেকে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হয়েছেন প্রিন্সিপাল...
-
এ এম রিয়াছাত আলী সমকাল প্রতিবেদক আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-৩ আসন থেকে চারদলীয় জোট প্রার্থী হয়েছেন জামায়াত নেতা এএম রিয়াছ...
-
বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাক ও সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতির নির্দেশে পুরোপুরি পাল্টে যায় পুরো দেশের চিত্র। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পাল...
-
মাওলানা হাবিবুর রহমান চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি দামুড়হুদা, জীবননগর ও চুয়াডাঙ্গা সদর নিয়ে গঠিত চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে এবার চারদলীয় জোটের প্রার্থী জামায়...
-
সংগ্রহ করা হয়েছে সামহোয়ারইনব্লগ এবং সচলায়তন থেকে। লেখক: রাশেদ ড. নূরুল উলার ডকুমেন্টারি এই অংশটুকু নেয়া হয়েছে Amita Malik's The Year ...
-
শান্তি কমিটি গঠনের সূত্রপাত। টিক্কা খানের সাথে বৈঠকরত ১২ জন রাজনৈতিক নেতার সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধি দলের নেতা নুরুল আমিন ও গোলাম আযম। দৈনিক পূ...
-
এই অংশটুকু নেয়া হয়েছে রশিদ হায়দারের এডিট করা “১৯৭১: ভয়াভয় অভিজ্ঞতা” (ঢাকা, জাতীয় সাহিত্য প্রকাশনী, ১৯৮৯) বইয়ের আব্দুল গোফরানের “ফয়েজ লেকের গ...
-
এসএ খালেক সমকাল প্রতিবেদক মিরপুর ও পল্লবী নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৪ আসন থেকে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হয়েছেন এসএ খালেক। অভিযোগ রয়েছে, একাত্তরে তিনি ছি...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন